১)
তুই চাইলে হয়তো জীবিকা হারামু
হয়তো সস্তায় বেইচা দিমু বসন ও বিছানা
হয়তো পাথর কাটতে হইবো
হইতো হইবো কুলি কিংবা রাস্তা সাফ করা মেথর
হয়তো এক মুঠ্ খাওয়ার লাইগা ঘাটমু আবর্জনা
থাকমু নিস্তেজ, নাঙা আর খিদায় কাবু,
শুন্ তাও সূর্যের দুশমন, তাও শুইনা রাখ্
‘কোন খাতির নাই,
শিরায় শেষ কাঁপন থাকা পর্যন্ত, —চলবো প্রতিরোধ’।
হয়তো জমিনের শেষ টুকরাটাও চুরি করবি
হয়তো কয়েদখানারে খাওয়াইবি আমার যৌবন
আর তছনছ করবি পরদাদার রাইখা যাওয়া চিহ্ন
— আসবাবপত্র, জামা-কাপড় এবং বয়াম,
আগুন দিবি আমার বই আর কবিতায়
হয়তো শরীর খাওয়াইবি কুত্তারে
আর গেরামে চাপাই দিবি দুঃসহ দুঃস্বপ্ন।
শুন্ সূর্যের দুশমন, তাও শুইনা রাখ্
‘কোন খাতির নাই,
শিরায় শেষ কাঁপন পর্যন্ত থাকা পর্যন্ত, — চলবো প্রতিরোধ’।
হয়তো আমার চোখ থিকা আলো কাইড়া নিবি
বঞ্চিত করবি আম্মার ঠোঁটের চুমা থিকা
হয়তো অভিশাপ দিবি আমার কওম, বাপ আর সন্তানেরে
বিকৃত করবি ইতিহাস
হাসতে হাসতে সন্তানের সুখের মুহূর্তটারে মাটি কইরা দিবি
মেকি মুখে বোকা বানাইবি আমার বন্ধুরে
আমার চারপাশে তুলবি দেয়াল,
দিনগুলারে জর্জরিত করবি অপমানে।
শুন্ সূর্যের দুশমন, তাও শুইনা রাখ্
‘কোন খাতির নাই,
শিরায় শেষ কাঁপন থাকা পর্যন্ত, — চলবো প্রতিরোধ’।
শুন্ সূর্যের দুশমন,
বন্দর সাইজা উঠে, বাতাসে বইতাছে খোশ পয়গাম
অন্তরগুলা জ্বলজ্বল করে, কানে উৎসাহের কোলাহল
দিগন্তে উঁকি দেয় পাল
বাতাস বিদীর্ণ কইরা, বাঁধারে বুড়া আঙুল দেখাইয়া।
যেন ক্ষতির সমুদ্র থিকা ফিরা আইতাছেন ইউলিসিস।
সূর্য ফিরা আহে, আমার ঘরহীন মানুষদের সূর্য
তার জন্য, তার জন্য আল্লাহর শপথ
কোন খাতির নাই,
শিরায় শেষ কাঁপন থাকা পর্যন্ত, — চলবো প্রতিরোধ
প্রতিরোধ
প্রতিরোধ
আর প্রতিরোধ।
~~~
২)
যেই দিন আমারে খুন করা হইবো
খুনি সেই দিন কয়ডা টিকেট পাইবো পকেট হাতড়াইয়া
দীর্ঘ সফরের টিকেট,
একটা শান্তির উদ্দেশ্যে
একটা ফসলের মাঠ আর বৃষ্টির উদ্দেশ্যে
আরেকটা মানবজাতির বিবেকের উদ্দেশ্যে।
দোহাই, প্রিয় হত্যাকারী আমার
নষ্ট কইরা ফেইলো না টিকেট
দাঁড়াই থাইকো না হত্যার পরে, চইলা যাইয়ো।
~~~
৩)
কয়েদখানায় খুপরির ছোট্ট ফাঁক দিয়া
আমার দিকে চাইয়া হাসতে থাকা গাছগুলানরে দেখি,
দেখি ছাদগুলায় ভইরা উঠা পরিজন,
দেখি জানলাগুলা কান্দে আর দোয়া করে
আমার জন্য।
কয়েদখানায় ছোট্ট খুপরির ছোট্ট ফাঁক দিয়া
আমি তোমাগো বড় কয়েদঘর দেখি।
~~~
৪)
ভাইয়েরা আমার
জাগো, আগাই আসো
জালিমের মুখের সামনে উইঠা থাক
তোমার হাত
পূর্বপুরুষের রাইখা যাওয়া ঝাণ্ডা
নয়া প্রজন্মরে জড়াই ধরে, কয়—
আমি প্রতিবাদ কইরা গেছি
এইবার তোমার পালা,
প্রতিবাদ করো।
তরজমাঃ আহমেদ দীন রুমি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কবি ও চিন্তক।