এমনও হতে পারতো একজন প্রেমিক হিসাবে সে কাঁদছিল, তা
হয়নি। সে কাঁদছিল খাদ্যের অনিশ্চয়তায়। পৃথিবীর সবচে বড়
ক্রাইসিস খাদ্য সমস্যা তারে স্পর্শ করেছিল পরিপূর্ণ ভাবে, অথচ
ভাবা হইত সে ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবে অথবা মর্মস্পর্শী
বেদনায় কাতরাবে।
প্রেমটা হয়ত ভেঙ্গে গেছিল তার কোনোদিন, কথা দিয়া কথা সে
রাখতে পারে নাই, আদতেও কি রাখা সম্ভব কোনো কথা? কথা
তো বাতাসের চেয়েও তরল, রাখা যায় নাই কোথাও। তবু হয়ত
কথা না রাখার সেই সব আপাত দিনে তারে ছেড়ে যাচ্ছিলো
কেউ, বলেছিল- তোমারে দেখা যাক শেষবার, যতটা কান্না
লুকাইয়া কাঁদতাম তার বিনিময়ে কিছু ঘৃণা তোমার চোখে ঢালি
আজ। ঘৃণা নিয়ে অথবা জীবনভর লুকাইয়া কাঁদার স্মৃতি নিয়ে সে
চলে গেল, তারেও ধরে রাখা গেলোনা কোনো কথায়, মানুষও
তরল কথার চেয়ে, কত সহজে কত বেদনা হয়ে চলে যায় পিছনে
না তাকিয়ে।
সে দিন সারাটা দুপুর সে তপ্ত রোদে ঘুরে ফিরে বেড়াইছিল শহরে,
ভাবতেছিল কথাগুলো কত সহজেই হয়ত রাখা যাইতো, ভিটামিনের
বোতলে ভরে, তারপর প্রতি বেলায় নিয়ম করে খেয়ে বসা যাইতো
কাজে, সম্ভাবনার প্রতি যাওয়া যাইতো ধীরে। প্রেম চলে গেছিল
যেদিন সেদিন ধীরে ঘরে ফেরাটাও হয়ে গেছিল নিরর্থক, পকেটে
ছিল না টাকা, প্রেমিকার কাছে চাওয়া যাইতো, সেদিন তো প্রেম
আর ছিল না তাই চাওয়া গেলনা। সারাদিন হেঁটে না খেয়ে ক্ষুধার্ত
তার হঠাৎ কান্না পাইয়া বসছিল সেদিন, মনে হচ্ছিল আহা এমন
অনটনে তারে বলা যাইতো ক্ষুধা, সে রাঁধতো নুডলস, আর
বিকালের কোথাও খাওয়া যাইতো আরামে। তারপর কিছু টাকা
নিয়ে বেন্সন খেতে খেতে ফেরা যাইতো বাড়ি। আর আজ
খাবারের নিশ্চয়তা নাই এই ভেবে তার মনে হইল মরে যায়
ক্ষুধার চেয়ে, কাঁদতে কাঁদতেই না হয় মরা গেল ক্ষুধার যন্ত্রণায়।
সেই ক্ষুধার্ত দিনে তার একবারো মনে হয় নাই সেদিন আহারে
আজ প্রেম ভেঙ্গে গেল, ক্ষুধা ভুলে প্রেমের জন্য নাহয় কাঁদি!